কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা ।

প্রশ্নঃ হিন্দু কথাটি বিদেশীয় কি ?
আমাদের ধর্মের নাম সনাতন/হিন্দু ?
কোনটি ঠিক এবং কেন ?

উত্তর : ধর্ম কি ?
ধর্ম তু সাক্ষাৎ ভগবৎ প্রণীতম (ভাঃ ৬/ ৩/ ১৯), ধর্ম হল স্বয়ং ভগবানের প্রনীত আইন, সেই আইন অনুসারে মানুষের চলা উচিত ।
শ্রীমদ্ভগবদগীতা হল ধর্মের প্রাথমিক
শাস্ত্র যাতে ভগবান সরাসরি উপদেশ দান করেছেন । ধর্ম এই জগতে সঞ্চালিত হচ্ছে শ্রীগুরু শিষ্য পরম্পরার মাধ্যমে এবং পরম্পরা প্রাপ্ত মিমং রাজর্ষয়ো
(গীতা ৪/ ২), এইভাবে পরম্পরার মাধ্যমে এই পরমবিজ্ঞান রাজর্ষীরা লাভ করেন ।

ধর্ম কয় প্রকার ও কি কি ?
ধর্ম দুই প্রকার ।
১.নিত্য বা সনাতন,
২.নৈমিত্তিক বা অনিত্য

হিন্দু কথাটি বিদেশীয় কি ?
-ভারত ছিল আর্যদের দেশ, পশ্চিমা
দেশগুলি ছিল অনার্যদের । অনার্য
ম্লেচ্ছরা ভারত দখল করবার চেষ্টা
করল, ভারতকে আক্রমণ করবার সুগম পথটি ছিল সিন্ধু নদের উপর দিয়ে ।
সিন্ধু নদের উপত্যকায় বহু লোক বাস করত । ম্লেচ্ছদের ভাষা ছিল অন্যরকম, তারা সিন্ধু কথাটি উচ্চারণ করতে পারতনা । 'স' কে 'অ' বা 'হ'এর মত
উচ্চারণ করত 'দ' বা 'ধ'কে 'ড' বলত, সিন্ধুকে ইন্ডু বলত । এভাবেই এই সিন্ধু উপত্যকা তথা সারা ভারত দেশটিকে তারা ইন্ডুয়া বা ইন্ডিয়া নামকরণ করল । আর ভারতবাসীদের
সেই অর্থে ইন্ডু বা হিন্দু বলে অভিহিত
করল । কোন ও বৈদিক শাস্ত্রে হিন্দু কথাটি খুজে পাওয়া যাবেনা । হিন্দু নামটি যবনদের দেওয়া নাম ।

সনাতন ধর্ম কোনটি ?
কৃষ্ণ ভক্তি অনুশীলন করাই জীবের সনাতন ধর্মশাস্ত্রে বলা হয়েছে –
"যে চ বেদবিদো বিপ্রা যে
চাধ্যাত্নবিদো জনাঃ
তে বদন্তি মহাত্মানং কৃষ্ণং ধর্মং সনাতনম্ "
যিনি সঠিক ভাবে বেদ অধ্যায়নের
করেছেন তিনি প্রকৃত বিপ্র বা বেদজ্ঞ
যিনি আধ্যাত্মিক জীবন সম্বন্ধে যথার্থই
অবগত তিনি পরমেশ্বর ভগবান । শ্রীকৃষ্ণকে অনুসরন করাকেই জীবের সনাতন ধর্ম বলে বর্ণনা করেন (মহাভারত) ।

আমাদের পন্ডিত মহোদ্বয় গণ……..
১.প্রফেসর নিরঞ্জন অধিকারী,
২.প্রফেসর ড.দুলাল কান্তি ভৌমিক,
৩.প্রফেসর সুনীতি কুমার ভদ্র,
৪. ড.অসীম সরকার
ইত্যাদি পন্ডিত মহোদ্বয়গন আমার দৃষ্টিতে জ্ঞানপাপি ।
বর্তমানে এমন কোন পাষণ্ড নাই যিনি
নিজের ধর্মের নাম অবধি ভুল লেখেন । তবে আমাদের সনাতনে উপরিউক্ত অনেক কথিত পন্ডিত আমার
দৃষ্টিতে জ্ঞান পাপী আছেন যারা
নিজের ধর্মের নাম পর্যন্ত সঠিক লিখতে
কিংবা বলতে পারেন না । আপাতত
দৃষ্টিতে তাদেরকে আমরা সর্ব্বোচ্চ
শিকড়ে অধিষ্ঠিত করেছি ।
যে তথাকথিত পন্ডিতগন বর্তমান অবধি ও আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল ব্যাখ্যায় প্রভাবিত করছে ।

যেকোন স্কুলের সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীদের ধর্মের নাম দেওয়া আছে 'হিন্দু ধর্ম শিক্ষা' , তবে এই জ্ঞান পাপীরা কি আদৌ তাদের জন্ম পরিচয় এবং ধর্মের উৎপত্তি বিষয়ে অজ্ঞাত ?
কোন মুসলিম কি মাতাল অবস্থাতেও
তাদের ধর্মের নাম মুসলিম বলে ?
তবে কথিত পন্ডিত গন কেন নিজের ধর্মের নাম সনাতন না লিখে বিদেশীয়দের রাখা জাতির নাম ধর্মের নামে ব্যবহার করেন ?

যদি কথিত পন্ডিতগনই আমাদের ধর্মের নাম সঠিক ভাবে না জানে তবে আগামী প্রজন্মকে আপনি কি জবাব দিবেন ? তারা যদি প্রশ্ন করে যে, যে ধর্মের নামই ভুল সেই ধর্মে আবার সঠিক পাবো কোথায় ? সনাতন ধর্ম ভুয়া, বানোয়াট ?
তখন আপনি উত্তর দিতে পারবেন কি?
এই প্রশ্নই মুসলমান বাড়ানোর জন্য একধাপ যথেষ্ট নয় কি ?

উপসংহারঃ
ধর্মের উদ্দেশ্য যদি যথার্থ ভগবান কে
ভালবাসা হয় এবং সকলেই নিজেকে
ভগবানের বিনীত নিত্যদাস বলে মনে
করে । ভোগবুদ্ধি পরিহার করে তাহলে
অতিসহজেই ধর্মের বিরোধ ধুয়ে মুছে
পরিস্কার হয়ে যাবে । গীতা সাক্ষাৎ পদ্মনাভ শ্রীহরির মূখপদ্ম থেকে নিঃসৃত, তা সম্যকরুপে অধ্যয়ন করা কর্তব্য । অপরাপর নানা শাস্ত্রের কি প্রয়োজন? গীতা সর্বশাস্ত্রময়ী, সর্ববেদময়ী ও সর্বধর্মময়ী, সুতরাং গীতা অভ্যাস করা উচিত । ভগবদগীতা পাঠ করলেই মানুষ সমস্ত বৈদিক জ্ঞানের সারমর্ম উপলব্ধি করতে পারবে ।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান